শিরায় রক্ত জমাট বাঁধে যে রোগেঃ ডিভিটি বা ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস
ডিভিটি বা ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস আমাদের শিরার (রক্তনালী) একটি রোগ। এই রোগে অনেক সময় পা হঠাৎ করে ফুলে ব্যথা শুরু হয়, লাল হয়ে যেতে শুরু করে এবং ব্যথা করে। বাড়তে বাড়তে অনেক সময় ব্যথা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। এমন একটি রোগের নামই ডিভিটি বা ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস। যারা উড়োজাহাজে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন তাদের অনেকেরও এমনটি হতে পারে। ইকোনোমি ক্লাশের যাত্রীদের এ রোগটি বেশী হয় বলে একে ইকোনোমি ক্লাশ সিনড্রম ও বলা হয়।
আমাদের শরীরে দুই ধরনের শিরা আছে, একদল থাকে শরীরের উপরিভাগে অর্থ্যাত চামড়ার নীচে যা আমরা খালি চোখে দেখতে পারি । আর একদল আছে যারা থাকে মাংশপেশীর গভীরে, যা বাইরে থেকে দেখা যায়না। এরাই বেশিরভাগ রক্ত প্রবাহ হৃদপিন্ডে নিয়ে আসে। এই গভীরের রক্তনালীগুলোতে রক্ত জমাট বেধে গেলেই ডিভিটি হয়।
ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস হলে সাথে সাথেই চিকিৎসা শুরু করা উচিত। চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হলে এটা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং পায়ে ঘা হয়ে যেতে পারে। বেশী দেরি করলে এমনকি পা কেটে ফেলা দেবার ও প্রয়োজন পরতে পারে। এখান থেকে জমাট রক্ত ছুটে ফুসফুসে গিয়ে মৃত্যু ঘটার নজির ও কম নয়।
ষাটোর্ধ বয়স, ক্যান্সার, মেদবহুল শরীর, গর্ভাবস্থা, জন্মনিয়ন্ত্রনের বড়ি খেয়ে চলা, কোমড়ের বা হাটুর বড় অপারেশন করানো, দীর্ঘ সময় পা না নাড়িয়ে বসে থাকা ইত্যাদি নানা কারনে ডিভিটি হতে পারে। রক্তনালীর পরীক্ষা (ডুপ্লেক্স স্ক্যান) পরীক্ষার মাধ্যমে এটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব।
রক্তনালী বিশেষজ্ঞগন এই রোগের চিকিৎসায় রক্ত পাতলা করার জন্য রক্তনালীতে হেপারিন ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকেন। এছাড়া রোগ পরবর্তী সময়ে ওয়ারফেরিন ট্যাবলেট ও অন্যন্য রক্ত পাতলাকারি অসুধ দিয়ে থাকেন। এই রোগীকে হাটা চলার সময় ক্রেপ ব্যান্ডেজ নামক এক ধরনের বিশেষ আবরনী পায়ে পরে থাকতে হয়। ঘুমানোর সময় ক্রেপ ব্যান্ডেজ খুলে শুতে হয় এবং পায়ের নীচে বালিশ দিয়ে পা সামান্য উচু করে শুতে হয়।